UNESCO স্বীকৃত বৌদ্ধ বিহারকে জাতীয় সম্পদের মর্যদা দিল কোরিয়া
বৌদ্ধবার্তা ডেস্ক:
UNESCO এর বিশ্ব ঐতিয্য তালিকাভুক্ত সপ্তম শতাব্দীর কোরিয়ান বৌদ্ধ পর্বত মন্দির বুসেওক-সা (부석사) আনুষ্ঠানিকভাবে কোরিয়ার জাতীয় সম্পদ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। ঘোষণাটি এসেছে দক্ষিণ কোরিয়ার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
এখানে
মূলত দুটি পেবেলিয়নকে জাতীয় সম্পদ হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। উত্তর কোরিয়ার কালচারাল
হেরিটেজ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (CHA) উত্তর গিয়ংসাং প্রদেশের বুসেওক-সা-তে আনিয়াং-রু
প্যাভিলিয়ন এবং বিওমজং-গাক প্যাভিলিয়ন দুটিই এই মনোনয়নে স্থান পেয়েছে।
১৫৫৫
সালে গাঙ্গুন-গাকের মূল একতলা কাঠামোটি অগ্নিকাণ্ডে ভষ্মিভূত হয়ে যাওয়ার পর, ১৫৭৬
সালে গেট টাওয়ারের উপরের তলায় আনিয়াং-রু প্যাভিলিয়ন তৈরি করা হয়। এর মধ্যে বিওমজন-গাক
প্যাভিলিয়ন স্বতন্ত্র ছাদ কাঠামোর জন্য বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। ঐতিহাসিক নথি অনুসারে,
এখানে একটি লোহার ঘণ্টা রাখা হতো যা ১৯ শতকে অদৃশ্য হয়ে যায়। কোরিয় কালচারাল হেরিটেজ
অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বলেছে যে, ছাদের নকশা এবং নির্মাণ অস্বাভাবিক জটিল এবং নান্দনিক,
দেখলে সবারই মনে আনন্দ সঞ্চার করে। মূলত এই কারণে বেওমজন-গাককে মহান ঐতিহ্যের মূল্যবান
কাঠামো হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
বুসেওক-সা
পেবেলিয়নি "দ্য টেম্পল অফ দ্য ফ্লোটিং স্টোন" নামেও পরিচিত। বিখ্যাত পণ্ডিত-সন্ন্যাসী
উইসাং (৬২৫-৭০২ CE) এটি ৬৭৬ সালে এটি প্রতিষ্ঠা করেন। উইসাং ছিলেন ইউনিফাইড সিলা আমলের,
চীনের তাং রাজবংশের সমকালীন পণ্ডিত।
ইউনেস্কোওয়ার্ল্ড হেরিটেজ দ্বারা স্বীকৃত বোংওয়াং পর্বতের ঢালে অবস্থিত। বুসেওক-সা কোরিয়ান
বৌদ্ধ জোগি অর্ডার দ্বারা পরিচালিত হয়। মন্দিরটিতে অমিতাভ বুদ্ধের মূর্তি রয়েছে।
এটি দক্ষিণ কোরিয়ার দ্বিতীয় প্রাচীনতম কাঠের ভবন, ১৩৭৬ সালে এটি পুনঃনির্মিত হয়।
মন্দির কমপ্লেক্সে রয়েছে ২৫টি ভবন, প্যাগোডা এবং অন্যান্য কাঠামো।
বুসেওক-সা
মন্দিরটি সাতটি প্রাচীন বৌদ্ধ পর্বত মন্দিরের মধ্যে একটি, যা সপ্তম থেকে নবম শতাব্দীর
মধ্যে বার্ষিক ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির সভায় সর্বসম্মত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ইউনেস্কো
বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসাবে তালিকাভুক্ত করে।
ওয়ার্ল্ড
হেরিটেজ কমিটি বলেছে, "কোরিয়াতে বৌদ্ধধর্মের একটি দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে যা কোরীয়
উপদ্বীপে বহু ঐতিহাসিক যুগ অতিক্রম করেছে। সাত পর্বত মঠ সপ্তম শতাব্দী থেকে বর্তমান
দিন পর্যন্ত বৌদ্ধ সন্ন্যাসী সংস্কৃতির একটি স্বতন্ত্র কোরিয়ান ইনস্টিটিয়েশন হিসেবে
প্রতিনিধিত্ব করছে। এই পাহাড়ী মঠগুলি পবিত্র স্থান এবং বৌদ্ধদের আধ্যাত্মিক অনুশীলনের
দীর্ঘ এবং অব্যাহতভাবে চলা ঐতিহ্যের একটি ব্যতিক্রমী সাক্ষ্য প্রদান করে।"
(UNESCO)
২০১৫
সালের আদমশুমারির তথ্য অনুসারে, দক্ষিণ কোরিয়ার জনসংখ্যার সংখ্যাগরিষ্ঠ ৫৬.১ শতাংশ
মানুষ কোনো ধর্মীয় অনুশাসন মানে না। সেই হিসেবে খ্রিস্টানরা এখানে জনসংখ্যার বৃহত্তম
অংশ যা প্রায় ২৭.৬ শতাংশ। কোরিয়ায় বৌদ্ধরা আছে ১৫.৫ শতাংশ।