এডিনবার্গে ১ লক্ষ ২০ হাজার ইউরো ব্যয়ে বৌদ্ধ বিহার প্রতিষ্ঠা - Dhammapadipa in Edinburgh
এডিনবার্গে প্রতিষ্ঠিত বৃহত্তম থাই বৌদ্ধ মন্দিরকে নতুন করে সাজানো হয়েছে। ধম্মাদীপা নামে থাই থেরাবাদা বৌদ্ধ বিহারটি প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার ইউরো ব্যয় করে (US$160,000) সংস্কার করা হয়ছে। মন্দিরটি ২০০৫ সালে সর্বপ্রথম প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০০৪ সালে ভারত মহাসাগরে সৃষ্ট ভূমিকম্প এবং সুনামিতে প্রায় ২২৭৮৯৮ জনের প্রাণহানি হয়। এই বিপুল সংখ্যক মানুষের স্মরণে এডিনবার্গে বৌদ্ধ বিহারটি স্থাপিত হয়েছিল।
এডিনবার্গ
স্কটল্যান্ডের রাজধানী ও যুক্তরাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। এটি স্কটল্যান্ডের ৩২টি
কাউন্সিল অঞ্চলের একটি। ঐতিহাসিকভাবে মিডলোথিয়ান কাউন্টির একটি অংশ, এটি ফোর্থের দক্ষিণ
উপকূল লথিয়ানে অবস্থিত।
প্রতিষ্ঠার
পরের বছরগুলোতে ইংল্যান্ডের লিসেস্টার সিটি ফুটবল ক্লাবের থাই চেয়ারম্যান ভিচাই শ্রীবধনপ্রভা-এর
আর্থিক সহায়তায় মন্দিরটিকে স্কটিশ রাজধানীর দক্ষিণ-পূর্বে একটি প্রাসাদে স্থানান্তর
করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। ২০১৮ সালে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় শ্রীবধনপ্রভার আকস্মিক
মৃত্যুর পর এই পরিকল্পনা বন্ধ হয়ে যায়।
সংস্কারের
কাজ চলাকালীন, মন্দিরটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত ছিল, এমনকি COVID-19 মহামারীর চলাকালীন
সময়ে এটি ফুড ব্যাঙ্ক হিসেবে কাজ করেছে। বিহারটি এডিনবার্গের স্থানীয় থাই বৌদ্ধদের
জন্য নিয়মিত ধর্মীয় কার্যক্রম এবং স্থানীয় অ-বৌদ্ধ এবং ধর্মান্তরিতদের কাছে জনপ্রিয়
পরিচিতিমূলক ধ্যান ও যোগ ক্লাসের আয়োজন করে।
২০১৬
সালে মন্দিরটি চোরদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল। ঐ সময় বিহারটির প্রধান বুদ্ধ মূর্তিটি
চুরির শিকার হয়েছিল। ২০১৮ সালে থাইল্যান্ডের একজন পাথর খোদাইকারী মন্দিরের জন্য আরেকটি
নতুন মূর্তি তৈরি করেন যার ওজন প্রায় ২৫০ কেজি।
বিহারে
সহ-অধ্যক্ষ প্রসেট প্রমমালা গর্ব করে বলেছিলেন, “এটি সম্পূর্ণ হয়ে গেলে এডিনবার্গে
পাঠানো হবে, যেখানে এটি স্লেটফোর্ড রোডের পাশে মাথা উচু করে দন্ডায়মান হবে। আমরা আশা
করি, আমাদের মন্দিরের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় এই অসামান্য মূর্তিটি দেখে সকল দর্শনার্থীআনন্দিত হবেন।”
চলতি
বছর সোনার পাতা দিয়ে সাজানো ৫০০ কেজি ওজনের একটি নতুন বুদ্ধমুর্তি মন্দিরে প্রদর্শন
করা হয়েছে। এটি ২০২৩ সালে স্কটল্যান্ডের জাতীয় জাদুঘরে প্রদর্শিত হওয়ার কথা রয়েছে।
মন্দিরের
চেয়ারম্যান কাচেন গেরডফোল বলেছেন, “মন্দিরটি ২০০৫ সাল থেকে এখানে বিদ্যমান। এশিয়ায়
সুনামির পর এখানে বসবাসরত থাই সম্প্রদায় একত্রিত হওয়ার ফলে এটি আজ এই অবস্থায়। এটি
বর্তমানে সম্প্রদায়ের প্রাণ কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। বৌদ্ধ অ-বৌদ্ধসহ অনেক আগ্রহী জনসাধারণকে
বিনা মূল্যে ধ্যান শিক্ষা দেওয়া হয় এখানে।
মন্দিরের
প্রধান ভিক্ষু ফ্রামাহা প্রসের্ত প্রমমালা সাম্প্রতিক সংস্কার সম্পর্কে বলেছেন, “এখানে
ব্যবহৃত পণ্যের গুণগতমান এবং সুন্দর ফিনিশিং এর জন্য অনেক বেশি বাজেটের প্রয়োজন হয়েছে।
আমারা অবশ্যই সমস্ত উপকরণ সরবরাহকারী এবং যারা সঠিক পণ্যটি আমাদের মাঝে বিক্রি করেছেন
তাদের কৃতিত্ব স্বীকার করছি, তাদের ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করতে চাই না। যারা অক্লান্ত পরিশ্রম
করে কঠিন সময়ে জন্য কাজ করে আমাদের পাশে ছিল এবং এখনো পর্যন্ত সহযোগীতা করে যাচ্ছে
তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
“মন্দিরটি সংস্কারের জন্য প্রায়
৫০,০০০ ইউরো খরচ হয়েছে কিন্তু এর পিছনে যে সকল মানুষ এবং সম্প্রদায়গুলো কাজ করেছে
তারা সত্যিই এই প্রকল্পের পিছনে আমাদেরকে ব্যাপক ছাড় দিয়েছেন৷ যদি সব মিলিয়ে হিসেব
করতে হয় এর আর্থিক মূল হবে প্রায় ১২০,০০০ পাউন্ড। বিহারটি সম্পন্ন করার জন্য সকলে
আমাদের জন্য সর্বোচ্চ ডিসকাউন্ট দেয় এবং দাম কম রাখে।"
বর্তমানে
ধম্মপদীপা বৌদ্ধ বিহারটি স্কটল্যান্ডে বসতি স্থাপনকারী থাই বৌদ্ধদের অভিভাবকের প্রতিনিধিত্ব
করে। এটি যুক্তরাজ্যের উইম্বলডন, লন্ডনের মূল থাই বৌদ্ধ মন্দির, ওয়াট বুদ্ধপাদীপা।